অতিরিক্ত ঘুমালে কী হয়?

অতিরিক্ত ঘুমালে কী হয় জানলে আপনিও অবাক হবেন..!

ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ককে পুনরুজ্জীবিত করে এবং দিনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তবে, অতিরিক্ত ঘুম কখনো কখনো ক্ষতিকর হতে পারে। যেমন ঘুমের ঘাটতি আমাদের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তেমনই অতিরিক্ত ঘুমেরও নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।



অতিরিক্ত ঘুমের সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকঃ



১. শারীরিক ক্লান্তি ও অসাড়তা

অতিরিক্ত ঘুমের পর অনেকেই ক্লান্ত ও অসাড় অনুভব করেন। এটি "স্লিপ ইনারশিয়া" নামে পরিচিত, যা আমাদের কার্যক্ষমতা এবং মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।

২. ওজন বৃদ্ধি

অতিরিক্ত ঘুমের সঙ্গে মেটাবলিজম ধীর হয়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এটি ক্যালোরি পুড়ানোর হার কমিয়ে দিতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

৩. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দৈনিক ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমান, তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ঘুম শরীরে গ্লুকোজের প্রসেসিংয়ে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৪. হৃদরোগের ঝুঁকি

অতিরিক্ত ঘুম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত বেশি ঘুমান, তাদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি হতে পারে।

৫. মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা

অতিরিক্ত ঘুম বিষণ্নতার (ডিপ্রেশন) লক্ষণ হতে পারে অথবা এটি বিষণ্নতাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। দীর্ঘ সময় ঘুমালে সামাজিক সম্পর্ক, কাজের প্রতি মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে।

৬. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া

অতিরিক্ত ঘুমের কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, এবং মনোযোগের ঘাটতি এসবের মধ্যে অন্যতম।



কতক্ষণ ঘুমানো স্বাভাবিক?

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট। এর চেয়ে কম বা বেশি ঘুম শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি বয়স, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে।


অতিরিক্ত ঘুম থেকে মুক্তির উপায়ঃ



  • ঘুমের রুটিন তৈরি করুন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস করুন।
  • শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ান: নিয়মিত ব্যায়াম করলে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা স্বাভাবিক মাত্রায় আসে।
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: ধ্যান বা রিলাক্সেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: যদি ঘুমজনিত কোনো সমস্যায় ভুগে থাকেন, বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

মতামতঃ

ঘুম আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও, অতিরিক্ত ঘুম শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একটি সুষম ঘুমের অভ্যাস বজায় রাখা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ঘুমের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে তা অবহেলা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Countdown Timer
00:01
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url